২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিংয়ের বাজার ছিল ২৬৫ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৭ সালের মধ্যে ৪০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। মানুষের সচেতনতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে প্যাকেটজাত ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ছে, এবং ক্রেতারা খোলা পণ্যের চেয়ে প্যাকেটজাত পণ্য কিনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। ফলে দেশে ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিংয়ের বাজার বড় হচ্ছে।
বাজারের সাথে সম্পৃক্ত যারা আছে তারা বলছেন, প্রবৃদ্ধির প্রায় ২০ শতাংশ নিয়ে বর্তমানে দেশে এ শিল্পের বাজারের আকার ৬ হাজার কোটি টাকা, যেখানে মানুষ কাজ করছে প্রায় ৫০ হাজার । স্থানীয় চাহিদা প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন, যার ৮০ শতাংশ দেশীয় কোম্পানি পূরণ করছে এবং ২০ শতাংশ আমদানি করা হচ্ছে ওষুধ খাতে ব্যবহারের জন্য।
বাংলাদেশ ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাফিউস সামি আলমগীর জানান, মানুষের সচেতনতা বাড়ার সাথে সাথে প্যাকেটজাত হাইজেনিক পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণের সক্ষমতা থাকলেও ওষুধ খাতে ব্যবহারের জন্য আমদানি করতে হচ্ছে কিছু অংশ । ওষুধ কোম্পানিগুলোও লোকাল পণ্য নেবে এলডিসি সুবিধা শেষ হলে তখন বাজার আরো বাড়বে।
১৯৭৮ সালে দেশে প্রথম ফ্লেক্সিবল ফয়েল পণ্য উৎপাদন শুরু হলেও খাতটি বিশেষভাবে বৃদ্ধি পায়নি। ২০০০ সালের পর থেকে এই পণ্যের চাহিদা বাড়তে থাকে এবং নতুন কোম্পানিগুলো এখানে বিনিয়োগ শুরু করে। ২০০৭-০৮ থেকে খাতটির প্রবৃদ্ধি প্রায় ২০% হারে বাড়ছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ১০০ কোম্পানি ফ্লেক্সিবল ফয়েল পণ্য উৎপাদন করছে, যেখানে ৭-৮টি বড় কোম্পানি বাজারের ৫০% শেয়ার নিয়ন্ত্রণ করছে।
এ শিল্পটি একসময়ে সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর ছিল, কিন্তু এখন প্রায় ৮০% চাহিদা স্থানীয়ভাবে পূরণ হচ্ছে। আকিজ গ্রুপ এ শিল্পকে কাঁচামাল দিয়ে সহযোগিতা করতে ১০০০ কোটি টাকার ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছে। আকিজের প্রধান সহযোগীদের মধ্যে আরবাব পলি প্যাক লিমিটেড, ফেমাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, মার্চেন্ট প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ এবং আরও অনেকে রয়েছে।
ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং প্রস্তুতকারকদের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মধ্যে পলিথিন, পলিয়েস্টার, নাইলন, ফিল্ম ফয়েল ল্যামিনেশন এবং ইনক অন্তর্ভুক্ত, যার ৮০% আমদানি করা হয়। আকিজ বিয়াক্স ফিল্মস লিমিটেড স্থানীয় কাঁচামালের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হলেও বন্ডেড ওয়্যারহাউজ এবং ট্যাক্স সুরক্ষার অভাবে পুরো উৎপাদন সক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছে না।
স্ট্যাটিস্টার ডেটা অনুযায়ী, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়ে আনুমানিক ৪৬০ মিলিয়ন টনে পৌঁছেছে, যার প্রায় ৩১% প্যাকেজিং খাতে ব্যবহৃত হচ্ছে, এটি প্লাস্টিক ব্যবহারের বৃহত্তম সেগমেন্টে পরিণত হয়েছে।
দেশের প্রথম প্যাকেজিং-নির্মাণকারক টাম্পাকো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাফিউস সামি আলমগীর স্থানীয়দের জন্য বিপুল রপ্তানির সম্ভাবনা দেখছেন। টাম্পাকো প্রাণ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ এবং নেসলে সহ ৯টি সেগমেন্টে ৪৮৫টি পণ্যের প্যাকেজিং আইটেম তৈরি করে থাকে। বছরে ১০ হাজার মেট্রিক টন পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি কোম্পানিটির ৮% থেকে ১০% মার্কেট শেয়ার রয়েছে। তবে সরাসরি রপ্তানি শুরু করতে এখনো নীতিগত সমর্থন এবং সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।
আইটি সহায়তাঃ টোটাল আইটি সলিউশন