আধুনিক প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রির একটি অনবদ্য উদ্ভাবন হলো ‘রোল টু পাউচ’ প্রযুক্তি। এটি এমন এক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে বিশাল প্লাস্টিক রোল থেকে শুরু করে একেবারে প্রস্তুত পাউচ বা প্যাকেট তৈরি করা হয়। খাদ্য, ওষুধ, কসমেটিক্স থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী — সবখানেই এই প্যাকেটের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। চলুন গভীরে গিয়ে জেনে নিই, কীভাবে কাজ করে এই চমকপ্রদ প্রযুক্তি।
রোল টু পাউচ প্রক্রিয়া: ধাপ ধরে বিশ্লেষণ
১. রোল রিলিং (Unwinding)
বিশাল প্লাস্টিক ফিল্ম রোল প্রথমে একটি স্পেশালাইজড মেশিনে সেট করা হয়।
কেন গুরুত্বপূর্ণ: যদি ফিল্ম সঠিকভাবে টানটান না হয়, তাহলে পরবর্তী প্রিন্টিং, সিলিংয়ে সমস্যা হতে পারে। তাই টেনশন কন্ট্রোলার দিয়ে রোলের টান ঠিক রাখা হয়।
২. প্রিন্টিং (Printing)
মেশিনের মাধ্যমে ফিল্মের ওপরে পণ্যের ব্র্যান্ড লোগো, নকশা, ব্যাচ নাম্বার, এক্সপায়ারি ডেট ইত্যাদি ছাপানো হয়।
প্রযুক্তি:
৩. লেমিনেশন (Lamination)
বিভিন্ন স্তরের ফিল্ম যেমন পলিপ্রোপিলিন (PP), পলিইথিলিন (PE), নাইলন বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল একসাথে যুক্ত করা হয়।
কারণ:
৪. কাটিং ও সিলিং (Cutting and Sealing)
ফিল্মকে নির্দিষ্ট সাইজে কাটা হয় এবং নির্দিষ্ট অংশে হিট সিল করে পাউচের আকৃতি দেওয়া হয়।
বিভিন্ন সিলিং অপশন:
৫. ফরমিং ও শেপিং (Forming and Shaping)
কিছু পাউচ যেমন গাসেট পাউচ বা স্পাউট পাউচের জন্য মেশিনে বিশেষ ছাঁচ ব্যবহার করে পাউচের নির্দিষ্ট আকৃতি তৈরি করা হয়।
৬. ইন্সপেকশন এবং ফিনিশিং
প্রতিটি পাউচ মেশিন ভিশন সিস্টেম বা ম্যানুয়াল ইন্সপেকশনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়। ফাটল, ছিদ্র, ভুল প্রিন্ট বা অসম সিল পাওয়া গেলে সেইসব পাউচ বাতিল করা হয়।
রোল টু পাউচ প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা
বাস্তব জীবনের উদাহরণ
বিশ্বের বিখ্যাত ব্র্যান্ড যেমন নেসলে, ইউনিলিভার, পেপসিকো — তারাও তাদের পণ্যের জন্য রোল টু পাউচ প্যাকেজিং ব্যবহার করে।
রোল টু পাউচ প্রযুক্তি কেবল একটি উৎপাদন প্রক্রিয়া নয়, বরং আধুনিক ব্যবসার জন্য অপরিহার্য এক সমাধান। উন্নত মানের প্যাকেট, পণ্যের সুরক্ষা, ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানো এবং পরিবেশ সংরক্ষণের দিকে এগিয়ে নিতে এই প্রযুক্তির গুরুত্ব আগামী দিনে আরও বাড়বে।
আইটি সহায়তাঃ টোটাল আইটি সলিউশন