google.com, pub-7673873710441026, DIRECT, f08c47fec0942fa0 প্যাকেজিং ছাড়া খাদ্য অপচয় ৩০-৫০% বেড়ে যায়: কীভাবে মোকাবেলা করবেন? - PPP News BD প্যাকেজিং ছাড়া খাদ্য অপচয় ৩০-৫০% বেড়ে যায়: কীভাবে মোকাবেলা করবেন? - PPP News BD
রবিবার | ৯ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | সকাল ৮:৪৩
শিরোনাম :
প্যাকেজিং ছাড়া খাদ্য অপচয় ৩০-৫০% বেড়ে যায়: কীভাবে মোকাবেলা করবেন? স্বচ্ছ প্লাস্টিক খাদ্য প্যাকেজিং কেন এত জনপ্রিয়? জেনে নিন সুবিধাগুলো! জাপানি বিজ্ঞানীদের নতুন আবিষ্কার: পানিতে মিশে যাবে পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিক ফ্লেক্সোগ্রাফি প্রিন্টিং প্রযুক্তির ইতিহাস ও বর্তমান ব্যবহার কচুরিপানা থেকে যেভাবে তৈরি হচ্ছে পরিবেশ উপযোগী প্লাস্টিক! PRAN-RFL গ্রুপের প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে ২০০ কোটি টাকার মেগা বিনিয়োগ! প্যাকেজিং শিল্পে নতুন প্রযুক্তি ও কোয়ালিটি কন্ট্রোলের গুরুত্ব বাংলাদেশে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার কতটা সফল? কমছে পরিবেশ দূষণ, সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থান বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক কতটা পরিবেশবান্ধব? জানুন এর আসল প্রভাব
প্যাকেজিং ছাড়া খাদ্য অপচয় ৩০-৫০% বেড়ে যায়: কীভাবে মোকাবেলা করবেন?

প্যাকেজিং ছাড়া খাদ্য অপচয় ৩০-৫০% বেড়ে যায়: কীভাবে মোকাবেলা করবেন?

বিশ্বব্যাপী খাদ্য অপচয় একটি মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং এই সমস্যা খাদ্য সুরক্ষা, অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং পরিবেশগত প্রভাবের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিশেষ করে, গবেষণায় দেখা গেছে যে প্যাকেজিং ছাড়া খাদ্য অপচয়ের হার ৩০-৫০% পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এটি খাদ্য ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তবে, এই সমস্যা মোকাবেলায় কিছু কার্যকর সমাধান রয়েছে যা গ্রহণ করলে খাদ্য অপচয় কমানো সম্ভব হতে পারে।

খাদ্য অপচয়ের পরিসংখ্যান

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ খাদ্য অপচয় হয়ে যায়, যার মধ্যে প্যাকেজিংয়ের অভাব একটি বড় ভূমিকা পালন করে। একদিকে খাদ্য উৎপাদন ও পরিবহন প্রক্রিয়ায় প্যাকেজিং না থাকলে খাদ্য দ্রুত পচনশীল হয়ে পড়ে, অন্যদিকে খুচরা বাজার এবং ভোক্তার ব্যবহারে আরও অপচয় ঘটে। এর ফলে ৩০-৫০% পর্যন্ত খাদ্য অপচয় হয়ে যায়, যা পৃথিবীর খাদ্য সংকট আরও বাড়িয়ে তোলে।

প্যাকেজিংয়ের ভূমিকা

খাদ্য প্যাকেজিং কেবল খাবারকে বাইরের পরিবেশ থেকে রক্ষা করে না, বরং এটি খাদ্যের সতেজতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষত ফলমূল, শাকসবজি, মাছ, মাংস এবং অন্যান্য পচনশীল খাদ্যগুলির ক্ষেত্রে প্যাকেজিং অপরিহার্য। প্যাকেজিং না থাকলে এই খাদ্যগুলো দ্রুত পচে যায়, পরিবহন বা মজুদ করতে সমস্যা হয়, ফলে খাদ্য অপচয়ের পরিমাণ বেড়ে যায়।

প্যাকেজিংয়ের সুবিধাসমূহ:

  • সতেজতা বজায় রাখা: খাদ্য প্যাকেজিং খাবারের সতেজতা দীর্ঘ সময় ধরে বজায় রাখতে সাহায্য করে, যার ফলে অপচয়ের হার কমে যায়।
  • পরিবহণ সহজতর করা: প্যাকেজিং খাদ্য নিরাপদভাবে পরিবহন করতে সহায়ক, বিশেষত দূরবর্তী স্থানগুলিতে খাদ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে।
  • পরিবেশ রক্ষা: কিছু প্যাকেজিং উপকরণ এমনভাবে তৈরি করা হয় যে, সেগুলি পরিবেশবান্ধব এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য।

খাদ্য অপচয়ের কারণ

  1. প্যাকেজিংয়ের অভাব: যখন খাদ্য প্যাকেজিং ছাড়া বাজারে আসে, তখন তা তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। ফ্রুটস, ভেজিটেবলস, মাংস, এবং ডেইরি প্রোডাক্টস প্যাকেজিং ছাড়া খুব দ্রুত পচনশীল হয়ে পড়ে।
  2. পরিমাণগত ভুল: অনেক সময় আমরা অতিরিক্ত খাদ্য কেনার কারণে তা শেষ না করে ফেলে দেই। সঠিক পরিমাণে খাদ্য কেনা এবং তা সংরক্ষণ করা অপরিহার্য।
  3. খাদ্য সংরক্ষণের অজ্ঞানতা: অনেক মানুষ জানেন না কীভাবে খাবার সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, খাবার যদি সঠিক তাপমাত্রায় বা উপযুক্ত পাত্রে রাখা না হয়, তাহলে তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
  4. ভোক্তার আচরণ: মানুষ অনেক সময় খাদ্য নষ্ট করে দেয় যেমন অতিরিক্ত রান্না করা, প্যাকেজিং খোলার পর খাদ্য খাওয়া না, অথবা পচে যাওয়া খাবার ফেলে দেয়।

কীভাবে খাদ্য অপচয় কমাতে সাহায্য করা যায়?

  1. উন্নত প্যাকেজিং প্রযুক্তি: আজকাল অনেক উন্নত প্যাকেজিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, যেমন “ভ্যাকুয়াম প্যাকেজিং”, “হেড স্পেস প্যাকেজিং” এবং “মডিফায়েড অ্যাটমোস্ফিয়ার প্যাকেজিং” (MAP)। এই প্রযুক্তিগুলি খাদ্যকে দীর্ঘ সময় ধরে সতেজ রাখে এবং অপচয় কমায়।
  2. স্মার্ট ফুড স্টোরেজ টিপস:
    • প্যাকেজিং করা খাবারগুলিকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করুন।
    • ফ্রিজে রাখা খাবারগুলোতে তারিখ এবং সময় লিখে রাখুন, যাতে আপনি জানেন কবে সেগুলোর ব্যবহার শেষ করতে হবে।
    • খাবারের বৈশিষ্ট্য অনুসারে উপযুক্ত প্যাকেজিং ব্যবহার করুন, যেমন শাকসবজি এবং ফলমূলের জন্য আলাদা প্যাকেজিং এবং মাংস ও মাছের জন্য অন্য ধরণের প্যাকেজিং।
  3. নতুন খাদ্য কৌশল:
    • মৌসুমী খাবারের দিকে মনোযোগ দিন। এটি খাবারের খরচ কমানোর পাশাপাশি অপচয়ও কমাবে।
    • খাবার সংরক্ষণের জন্য ড্রাইং, ফ্রিজিং, ক্যানিং বা অন্যান্য আধুনিক সংরক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করুন।
  4. ভোক্তা সচেতনতা:
    • ভোক্তাদের খাদ্য অপচয় কমানোর জন্য সচেতন করতে হবে। খাদ্য কেনার পর কীভাবে তা ব্যবহৃত হবে এবং কীভাবে তা দীর্ঘস্থায়ী হবে, এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি।

খাদ্য অপচয় কমানোর গুরুত্ব

খাদ্য অপচয় কমালে শুধু আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষতি কমে না, বরং পরিবেশও সুরক্ষিত হয়। খাদ্য উৎপাদনে যে পরিমাণ পানি, শক্তি এবং অন্যান্য সম্পদ ব্যবহার হয়, তা অপচয়ের ফলে বৃথা চলে যায়। বিশ্বব্যাপী খাদ্য অপচয় রোধ করার জন্য প্রতিটি ব্যক্তি, সংস্থা এবং দেশকে একযোগে কাজ করতে হবে।

খাদ্য অপচয় একটি গুরুতর সমস্যা, তবে এটি সঠিক পরিকল্পনা, প্যাকেজিং প্রযুক্তি, এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মোকাবেলা করা সম্ভব। প্যাকেজিং এবং খাদ্য সংরক্ষণের সঠিক কৌশলগুলো প্রয়োগ করে খাদ্য অপচয়ের হার ৩০-৫০% কমানো যেতে পারে, যা খাদ্য নিরাপত্তা এবং পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, আসুন আমরা সবাই খাদ্য অপচয় কমানোর জন্য সচেতন হই এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করি।

শেয়ার করুন





Translate Site »