প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি প্লাস্টিক খাতের সার্বিক উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা যেতে পারে। শনিবার (৯ এপ্রিল) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তোরণ পরবর্তী সময়ে টেকসই রপ্তানি বৃদ্ধি; প্লাস্টিক খাতের কৌশল নির্ধারণ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সভাপতিত্বে সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন ।
অনুষ্ঠানে আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল প্লাস্টিক খাতের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কাঠামো সহজীকরণ, নীতিমালা হালনাগাদ, রপ্তানি বৃদ্ধি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর, প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, আন্তর্জাতিক মানের টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং নতুন পণ্য উদ্ভাবনে ডিজাইনিং কার্যক্রমের ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান।
ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বেড়েছে এবং উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার বেসরকারি খাতের অগ্রগতির জন্য ক্রমাগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি প্লাস্টিক খাতের উন্নয়নে শুল্কমুক্ত সুবিধা সম্প্রসারণ, প্রণোদনা প্রদান এবং রপ্তানি পণ্যের জাহাজীকরণের মাশুল হ্রাসের প্রস্তাব করেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, এলডিসির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানি বৃদ্ধি ও পণ্যের বহুমুখীকরণ জরুরি। প্লাস্টিক খাতের বার্ষিক রপ্তানি প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং নীতিসহায়তা, টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন, পণ্য পেটেন্ট, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, এসএমইদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শুল্ক হ্রাস প্রয়োজন।
বিপিজিএমইএ সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্লাস্টিক খাতের মোট রপ্তানি ছিল প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং স্থানীয় বাজারের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এলডিসি উত্তরণের পর শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা হারানোর ফলে উৎপাদন সক্ষমতা হ্রাসের সম্ভাবনা তৈরি হবে, যা মোকাবিলায় আমদানি-রপ্তানি নীতিমালার সংস্কার, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ব্যবসাসহায়ক পরিবেশ উন্নয়ন এবং গবেষণা ও উন্নয়নের ওপর বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্লাস্টিক পণ্যের স্থানীয় চাহিদার ৮০ শতাংশই আমাদের নিজস্ব উৎপাদিত পণ্য। রপ্তানি বহুমুখীকরণ, ভ্যালু অ্যাডেড পণ্য উৎপাদন এবং আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় বাড়াতে হবে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, প্লাস্টিক পণ্য পুনর্ব্যবহারে সক্ষমতা বাড়ছে এবং এলডিসি উত্তরণ বিষয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস ও স্বল্পমূল্যে জাহাজীকরণ করলে প্লাস্টিক শিল্পের রপ্তানি বাড়বে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, প্লাস্টিক খাতের জিডিপিতে অবদান ০.৩৩ শতাংশ এবং ১.৫ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। বৈশ্বিক বাজারে এ খাতের অবদান ০.৬ শতাংশ। এ খাতের রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক মানের টেস্টিং ল্যাবরেটরি সুবিধা এবং নতুন পণ্য উদ্ভাবনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
আইটি সহায়তাঃ টোটাল আইটি সলিউশন