মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গঠনে যারা নির্মাণ কাজে অংশ নিচ্ছেন, তাদের প্রতি দেশের প্রতিটি নাগরিকের গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রয়েছে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমই বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে তাদের অবদান অপরিসীম। তবে প্রায়ই পত্রপত্রিকায় নির্মাণ শ্রমিকদের অসাবধানতার কারণে অকাল মৃত্যুর খবর দেখা যায়, যা পুরো জাতিকে শোকাহত করে। তাই নির্মাণ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি শ্রমিকের জীবনের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিম্নের ৫টি সেফটি গিয়ার ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।
১. সেফটি হেলমেট (Safety Helmet): মানবদেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে “মাথা” অত্যন্ত সংবেদনশীল। দেহের অন্যান্য স্থানে আঘাত পেলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে, তবে মাথায় গুরুতর আঘাত পেলে রোগীকে বাঁচানো অনেক সময় সম্ভব হয় না। অনেক নির্মাণ শ্রমিক সেফটি হেলমেট ব্যবহার করতে চান না, যা মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ। তাই নির্মাণ শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেফটি হেলমেট ব্যবহারের বিকল্প নেই।
২. সেফটি গগলস (Safety Goggles): দাঁত থাকতে দাঁতের মূল্য যেমন বুঝা জরুরি, তেমনই চোখ থাকতে চোখের মূল্যও বুঝা জরুরি। নির্মাণ শ্রমিকদের প্রায়শই ধুলোবালির সাথে কাজ করতে হয়। এতে ধূলিকণা চোখে প্রবেশ করে চোখে ছানি পড়া, কম দেখা, ব্যথা, চুলকানি ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। গ্রাইন্ডিং মেশিন বা ওয়েল্ডিং মেশিন ব্যবহারের সময় আগুনের ফুলকি চোখে প্রবেশ করে অন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই চোখের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেফটি গগলস ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. সেফটি গ্লাভস (Safety Gloves): যার হাত আছে, তার কাজ করে খাওয়ার ক্ষমতা আছে। তবে অসাবধানতার কারণে অনেক নির্মাণ শ্রমিক হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন বা অনেক ক্ষেত্রে সারাজীবনের জন্য হাত হারান। তাই নির্মাণ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি শ্রমিকের উচিত বিপদজনক কাজ করার আগে সঠিক সেফটি গ্লাভস পরা। আমাদের দেশে ৩০ টাকা থেকে ১২০০ টাকার সেফটি গ্লাভস পাওয়া যায়।
৪. সেফটি ভেস্ট (Safety Vest): সেফটি ভেস্ট রিফ্লেক্টিভ বস্তুর (পলিকটন বা পলিস্টার) সমন্বয়ে তৈরি, যা নির্মাণ শ্রমিকদের পাশাপাশি জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা যেমন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ব্যবহার করেন। সেফটি ভেস্ট দিনে কিংবা রাতে উভয় সময়ে পরিধান করা যায়। রাস্তা মেরামতের কাজ করলে সেফটি ভেস্ট দূর থেকে যানবাহন চালকদের কর্মীর উপস্থিতি জানান দেয় এবং সতর্কতার সাথে গাড়ি চালাতে সাহায্য করে।
৫. সেফটি সু (Safety Shoe): নির্মাণ এলাকায় খালি পায়ে বা সাধারণ জুতা পরে হাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ। কন্সট্রাকশন এলাকায় ধারালো পেরেক, টিন, পিচ্ছিল পদার্থ ইত্যাদি থাকে, যা পা কেটে যাওয়া বা পিছলে পড়ে হাত-পা ভাঙার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণ জুতা এসব ঝুঁকিপূর্ণ বস্তু থেকে পা সুরক্ষিত রাখতে পারে না। তাই নির্মাণ কাজে পা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রাখতে সেফটি সু ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।
আইটি সহায়তাঃ টোটাল আইটি সলিউশন